হযরত আশরাফ আলী চাঁদপুরী সাহ (র:) চাঁদপু রী সাহ দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠা।
তিনার একটি প্রসিদ্ধ ঘটনা:
বালক আশরাফ আলী সাহেব যখন ছোট ছিলেন তখনকার একটি ঘটনা।
তিনি একদা লাকসাম দোগাইয়া গ্রামের দিঘির পাড়ে আল্লাহর কাছে আরোগ্য লাভের আশায় বসে আছেন।এমন সময় একজন বৃদ্ধ সুপি এসে বলল বৎস তোমার কি হয়েছে? তিনি বললেন হুজুর আমি অনেক দিন যাবত অসুস্থ। অনেক হেকিম কবিরাজ এর ঔষধ খেয়ে ও ফল পাচ্ছিনা।
এই কথা শোনার পর সুফী সাহেব গাছ থেকে এক টুকরা ডাল বাকল হযরত আশরাফ আলী চাঁদপুরী সাহেবের শরীরে ডুকিয়ে দিয়ে বললেন তুমি আল্লাহর কৃপায় ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু এই কথা বলার পর সুফী সাহেব গায়েব হয়ে গেলেন।
বালক আশরাফ আলী চাঁদপুরীসাহ অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও তাকে পেলেন না। অবশেষে নিরুপায় হয়ে তিনি বাড়ি ফিরে গেলেন।
মা বললেন বাছাধন কোথায় গিয়েছো ? অনেক খোঁজাখুঁজি করছি ,তোমাকে পেলাম না।বালক আশরাফ আলী চাঁদপুরী শাহ বললেন মা আমি এখন সুস্থ । একজন সুফি দরবেশ আমাকে সুস্থ করে দিয়েছেন।
বালক আশরাফ আলী ঘুমিয়ে গেলেন। রাত গভীর হলো।তিনি স্বপ্নের ঘরে দিনের বেলার বৃদ্ধি সুফী সাহেবে হাজির হলেন। বালক আশরাফ আলী চাঁদপুরী শাহ বললেন হুজুর আমি তো আপনাকে অনেক খুঁজেছি। কিন্তু কোথাও পাইনি। আমি আপনার প্রেমে মশগুল হয়ে গিয়েছি। প্রতিউত্তরে সুফী সাহেব বললেন যাবে আমার সাথে বালক?
বললেন যাব। সুফী সাহেব বললেন চলো আমার সাথে। আমাকে পিছনে পিছনে অনুসরণ করো। বালক আশরাফ আলী তাই করলেন যাহা তিনি করতে বলেছেন। যেতে যেতে গন্তব্যে পৌঁছালেন। এমন সময় মোয়াজিজনের আজানের সুরে ঘুম ভাঙ্গলেন।
কাউকে কিছু না বলে তিনি সুফী সাহেবের স্বপ্নে দেখানো পথেই চলে গেলেন। সেই গন্তব্যে গিয়ে দেখেন মহান ব্যক্তি বসে আছেন। উনাকে দেখে বালক আশরাফ আলী হতভম্ব হয়ে গেলেন। এমনিতেও সেই বৃদ্ধ সুফি সাহেব। তিনি আর কেউ নন। তিনি হলেন সন্দল আউলিয়া, যুবদাতুল আ তকিয়া, উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ তাপস গাউসুল আজম আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (ক)।
স্বীয় মাশুকের দেখা পেলেন জনম জনম আজ সার্থক হয়ে গেল বালক সৈয়দ আশরাফ আলী চাঁদপুরি সহের। খেদমত করলেন তিনি একটানা 12 বছর। স্বীয় মাশুকের আদর-যত্ন স্নেহ ভালবাসায় বিভোর হয়ে গেলেন। নিজেকে উজাড় করে দিলেন গোলামী আর খেদমতে। কোন প্রকার ত্রুটি নাই, বিচ্যুতি নাই, এমন এক মহাব্বত যার কাছে দুনিয়াবী ভালোবাসা তুচ্ছ বলেই গণ্য।
হযরত গাউসুল আজম আহমদ উল্লাহ (ক) ডেকে পাঠালেন প্রিয় আশরাফকে। তিনি বললেন যাও আশরাফ আমার তরিকা শরীয়তের বাগানের ফুল ফুটিয়ে তুমি বিশ্ব ভবনে এক চিরস্মরণীয় অম্লান হয়ে থাকবে। যাও সফর করো, বাইয়াত করো , এবং তরিকা প্রতিষ্ঠা করো। চার তরিকার সবক দাও। আমার তরিকার শরীয়তের হকদার হও।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, মাইজভাণ্ডারী তরিকা শ্যামা থাকলেও চাঁদপুরী সাহের তরিকায় এর প্রচলন নেই। কারণ হযরত গাউসুল আজম প্রতিটি নিষেধ ছিল হযরত চাঁদপুরী শাহ এর প্রতি। নিজ পূত্রালয়ে এসে দরবার প্রতিষ্ঠা করলেন।আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়লো মাওলানা সৈয়দ আশরাফ আলী চাঁদপুরী শাহ এর জোস খেতি।
তিনি স্বীয় পীরের আদেশের উপর ভর করে, চার তরিকার তালিম দিয়ে, দেশ বিদেশ সফর করে, দিক হারা মানুষদেরকে ইসলামের মূলধারায় উপর প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। উপমহাদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত দরবার হিসেবে লাকসাম- দগাইয়া চাঁদপুর ঐতিহ্যবাহী চাঁদপুরী শাহ দরবারের গোড়াপত্তন করেন।
তিনার শতশত কেরামত লোক মুখে শোনা যায় এবং জীবনে তে পাওয়া যায়। সৈয়দ আশরাফ আলী চাঁদপুরী সাহেবের খলিফাদের অনেক সম্মান এবং কেরামত ও লোকমুখে শুনা যায়। আশরাফ আলীর ইন্তেকালের পর ওনার সুযোগ্য সাহেবজাদা উপমহাদেশের আলেম কুলের শিরোমনি ,গাউছে জামান কুতুবুল আউলিয়া, মুফতি সৈয়দ আলী আজম চাঁদপুরী শাহ এই দরবারের শান-মান সারা পৃথিবীতে স সুমজ্জিত রাখেন পিতার ন্যায়। তিনিও কামেলে মোকাম্মেল ছিলেন। লোকমুখে কিনার অনেক কেরামত শোনা যায়।
বিঃদ্রঃ - কালেক্টেড from FB
জানা-অজানার ইন্টারনেট।