পাসপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি যা একজন ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ করার অনুমতি প্রদান করে। যদিও পাসপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া ও খরচ দেশভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবুও মূল প্রক্রিয়াগুলি সাধারণত একই থাকে। এখানে আমরা কিছু দেশের পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ সম্পর্কে আলোচনা করব।
বাংলাদেশ
বাংলাদেশে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদনকারীকে স্থানীয় পাসপোর্ট অফিসে আবেদন করতে হয় অথবা অনলাইনে আবেদন করা যায়। প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পর বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙ্গুলের ছাপ এবং ছবি) সংগ্রহ করা হয়।
- খরচ: সাধারণ (ডেলিভারি সময় ২১ কর্মদিবস) - ৩৪৫০ টাকা, জরুরি (ডেলিভারি সময় ৭ কর্মদিবস) - ৬৯০০ টাকা।
ভারত
ভারতে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদনকারীকে পাসপোর্ট সেবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়। আবেদনকারীদের একটি সাক্ষাত্কারের জন্য নির্দিষ্ট পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র (PSK) বা পোস্ট অফিস পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র (POPSK) এ উপস্থিত হতে হয়।
- খরচ: নিয়মিত (১০ বছরের জন্য) - প্রায় ১৫০০ রুপি, তাত্ক্ষণিক (টাট্কাল স্কিমের মাধ্যমে) - প্রায় ৩৫০০ রুপি।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে পাসপোর্ট করার জন্য আবেদনকারীকে একটি DS-11 ফর্ম পূরণ করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় নথিসহ স্থানীয় পাসপোর্ট অফিস, পোস্ট অফিস, অথবা কিছু নির্বাচিত সরকারি অফিসে জমা দিতে হয়।
- খরচ: পাসপোর্ট বুক - $১৩০, পাসপোর্ট কার্ড - $৩০। এছাড়াও, প্রক্রিয়াকরণের জন্য $৩৫ ফি প্রযোজ্য।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে পাসপোর্ট করার জন্য অনলাইন বা পেপার ফর্মের মাধ্যমে আবেদন করা যায়। আবেদনকারীদের বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হয়।
- খরচ: ১০ বছরের পাসপোর্ট - £৭৫.৫০ (অনলাইন আবেদন) বা £৮৫ (পেপার আবেদন), শিশুদের পাসপোর্ট - £৪৯ (অনলাইন আবেদন) বা £৫৮.৫০ (পেপার আবেদন)।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় পাসপোর্ট করার জন্য আবেদনকারীকে অনলাইনে আবেদন করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় নথি ও ফি সহ স্থানীয় পোস্ট অফিসে জমা দিতে হয়।
- খরচ: ১০ বছরের জন্য - $৩০৮, ৫ বছরের জন্য (শিশু এবং বয়স্ক নাগরিক) - $১৫৫।
কেন ই-পাসপোর্ট প্রয়োজন?
১. বিশেষ সুরক্ষা:
- ই-পাসপোর্ট সাধারণ পাসপোর্টের চেয়ে অধিক সুরক্ষায় রয়েছে। এটি একটি এক্সপায়ার তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে তথ্য অপরাজেয় করে রয়েছে।
২. অনুমতি ও ব্যবস্থাপনা সুবিধা:
- ই-পাসপোর্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ করতে সহজ এবং দ্রুত অনুমতি পাওয়া যায়। এটি বিভিন্ন দেশের সরকারী ও ব্যবসায়ি
৩. সহজ ডেটা এক্সচেঞ্জ:
- ই-পাসপোর্ট একটি স্ট্যান্ডার্ডাইজড ইস্যু হয় এবং এর ডেটা সহজেই অন্যান্য সিস্টেমে এক্সচেঞ্জ করা যায়। এটি আন্তর্জাতিক ডেটা এক্সচেঞ্জের প্রক্রিয়াকে সহজ করে দেয়।
৪. সাথে সহজ অ্যাক্সেস:
- ই-পাসপোর্ট একটি এলেকট্রনিক ফরম অথবা ইলেকট্রনিক টোকেন হিসাবে ব্যবহার করা যায়, যা ভ্রমণকারীদের জন্য অ্যাক্সেস করা সহজ করে।
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার জন্য প্রক্রিয়া ও খরচ
ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম
১. অনলাইন আবেদন:
- বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অনলাইন পোর্টালে প্রবেশ করুন।
- ই-পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফর্মটি পূরণ করুন।
ফর্ম পূরণ এবং ডকুমেন্ট আপলোড:
- আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন।
- প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ, পূর্বের পাসপোর্ট (যদি থাকে), এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথি আপলোড করুন।
ফি পরিশোধ:
- অনলাইনে আবেদন ফি পরিশোধ করুন। পরিশোধের পর একটি পেমেন্ট রিসিট পাবেন।
সাক্ষাতের সময় নির্ধারণ:
- আপনার সুবিধামত পাসপোর্ট অফিসে সাক্ষাতের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করুন।
সাক্ষাত এবং বায়োমেট্রিক:
- নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট অফিসে উপস্থিত হয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য (আঙ্গুলের ছাপ, ছবি এবং স্বাক্ষর) প্রদান করুন।
ডেলিভারি:
- পাসপোর্ট প্রস্তুত হলে আপনি এসএমএস বা ইমেইল দ্বারা জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর পাসপোর্ট অফিস থেকে পাসপোর্ট সংগ্রহ করুন।
ই-পাসপোর্টের খরচ
বাংলাদেশে ই-পাসপোর্টের জন্য ফি সাধারণত পাসপোর্টের মেয়াদকাল এবং ডেলিভারির সময়ের উপর নির্ভর করে। বর্তমানে প্রচলিত ফি নিম্নরূপ:
৫ বছরের জন্য ই-পাসপোর্ট:
- সাধারণ (২১ কর্মদিবস): ৩,৫০০ টাকা
- জরুরি (৭ কর্মদিবস): ৫,৫০০ টাকা
- অত্যন্ত জরুরি (৪৮ ঘণ্টা): ৭,৫০০ টাকা
১০ বছরের জন্য ই-পাসপোর্ট:
- সাধারণ (২১ কর্মদিবস): ৫,৫০০ টাকা
- জরুরি (৭ কর্মদিবস): ৭,৫০০ টাকা
- অত্যন্ত জরুরি (৪৮ ঘণ্টা): ১০,৫০০ টাকা
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- জন্ম সনদ (যদি থাকে)
- পূর্বের পাসপোর্ট (যদি থাকে)
- অনলাইন আবেদন ফর্মের প্রিন্ট কপি
- পেমেন্ট রিসিট
এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আপনি বাংলাদেশে সহজেই ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেন। আপনার যদি আরো কোনো নির্দিষ্ট তথ্যের প্রয়োজন হয়, দয়া করে জানান।